মেয়েকে ‘ধর্ষণ’: বাবার ৭ দিনের রিমান্ড চাইলো পুলিশ

সিলেটের ওসমানীনগরে ১৪ বছরের কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া বাবা মাসুক মিয়াকে (৪২) জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন আদালত। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম বিচারক কাঁকন দে গ্রেপ্তারকৃতকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে রোববার রাতে মাসুক মিয়াকে সিলেট মহানগর পুলিশের দক্ষিণ সুরমা থানাধীন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ওসমানী নগর থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর সোমবার দুপুরে তাকে সিলেট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে হাজির করে মাসুক মিয়াকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন ওসমানী নগর থানা পুলিশ। তবে এদিন আদালতে রিমান্ড আবেদনের শুনানি না হয়ে পরবর্তী দিন ধার্য করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দৈনিক মানবাধিকার সংবাদ কে বলেন, “গতরাতে (রোববার) মেয়েটির পিতাকে সিলেটে দক্ষিণ সুরমা থানাধীন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করার পর আমরা আজ দুপুরে তাকে আদালতে প্রেরণ করি। পরে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন এবং রিমান্ডের শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেন”
প্রসঙ্গত, সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের রাইকদারা (নোয়াগাঁও) গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে বাবার লালসার শিকার হয়ে আসছে এক মাদ্রাসাছাত্রী (১৪)। তবে এতদিন ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখে কিশোরীটি। এদিকে দিনকে দিন অত্যাচারের পরিমাণ বাড়তে থাকলে সে তার চাচীকে বিষয়টি খুলে বললে এ নিয়ে জানাজানি হয়।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে মেয়েটির পিতা মাসুক মিয়া পলাতক থাকলেও গতকাল সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকে সিলেট মহানগর পুলিশের দক্ষিণ সুরমা থানাধীন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ওসমানী নগর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় কিশোরীটির চাচি ওসমানীনগর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার শিশুটি স্থানীয় একটি মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির আবাসিক শিক্ষার্থী। গত রমজানে ছুটিতে বাড়ি এসে প্রায় দেড় মাস অবস্থান করে। এ সময় তার বাবা নিয়মিত তাকে জোর করে নির্যাতন করত। ভয়ে বিষয়টি গোপন রেখে মেয়েটি আবারো মাদ্রাসায় ফিরে যায়। পরবর্তী সময়ে ঈদুল আজহার ছুটিতে বাড়ি এলে আবারো তার ওপর যৌন নির্যাতন চালায় কিশোরীটির বাবা। এতদিন ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখলেও গত বৃহস্পতিবার শিশুটি বাড়িতে ফিরে ঘটনাটি তার বড় চাচিকে জানায়। এ ঘটনায় রোববার রাতে চাচি কিশোরীটিকে নিয়ে থানায় হাজির হয়ে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
মামলার বাদী চাচি বলেন, “প্রায় ৬ বছর আগে মেয়েটির মা ৪ কন্যা সন্তান রেখে মারা গেলে তার বাবা আরও দুটি বিয়ে করে। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় পরের বিয়েগুলো ভেঙে যায়। নির্যাতিত মেয়েসহ তারা ৩ বোন মাদ্রাসায় থেকে লেখাপড়া করছে এবং ছোটটি আমার কাছে রয়েছে। বৃহস্পতিবার মাদ্রাসা থেকে ফিরে মেয়েটি (নির্যাতিতা) ঘটনাটি খুলে বললে আমি স্থানীয় মেম্বারকে অবগত করে পুলিশের শরণাপন্ন হই।”