আমাদের দেশের জনসংখ্যা অভিশাপ নয় বরং আশির্বাদ। তরিকুল ইসলাম, পিরোজপুর॥

নিজেস্ব প্রতিনিধিঃ ৭১ পরবর্তি বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে সাত কোটি যা ২০১৯ সালে এসে দাড়িয়েছে প্রায় আঠারো কোটি। এই জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করে সহজ শর্তে বিশে^র অন্যান্য দেশে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয় তাহলে বর্তমানে বিদেশ থেকে যে পরিমান রেমিটেন্স আসে অন্তত তার চেয়ে অনেক গুন রেমিটেন্স বাংলাদেশে আসবে দেশে কমবে বেকারত্ব উন্নত হবে দেশ। সদ্য শেষ হওয়া অর্থবছরে প্রায় এক হাজার পাঁচ কোটি ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা যা আগের বছরের চেয়ে ১৭ শতাংস বেশী। এই অঙ্ক বাংলাদেশের ইতিহাসে আসা এক অর্থবছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিটেন্স। এর আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৫ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছিল। প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ বা রেমিটেন্স গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। বাংলাদেশের জিডিপিতে ১২ শতাংস অবদান রাখে প্রবাসীদের পাঠানো এই বিদেশী অর্থ। বিদায়ী অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ১০৮ কোটি ২০ লাখ ডলার এসেছে যা গত বছরের জুন মাসের চেয়ে প্রায় ১৪ শতাংশ বেশী। দেশের রেমিটেন্স অর্ধেকের বেশি আসে মধ্যপ্রাচ্যের ৬ দেশ- সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, কুয়েত ও বাহরাইন থেকে। রেমিটেন্স বাড়ায় বৈদেশিক অর্থ রিজার্বও রয়েছে সন্তোষজনক অবস্থায়। প্রবাসী বাংলাদেশী তাদেরকে বলা হয় যারা বাংলাদেশে জন্ম গ্রহন করার পর অন্য কোন দেশে কাজ করছেন। ভাল পরিবেশে বসবাস করা এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও পরিবারকে অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বী করার আশায় বাংলাদেশীরা প্রবাসে পাড়ি দেয় বৈধ ও অবৈধ ভাবে। যে সব প্রবাসী বিদেশে অবৈধভাবে বসবাস করছে তাদেরকে বৈধ করার উদ্দ্যেগ নেয়া একান্ত জরুরী। পাশাপাশি জনশক্তি রপ্তানিতে বাংলাদেশ সরকার সহজ শর্তে আমাদের দেশের নাগরিকদের পাঠনো উচিৎ। বর্তমানে আমাদের দেশের নাগরিক বেশী সংখ্যক বসবাস করে সৌদি আরবে। তাদের পরিমান প্রায় ১০২ মিলিয়ন। সৌদি আরব ছাড়াও আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, কাতার ও বাহরাইনে প্রচুর পরিমান বাংলাদেশী নাগরিক বসবাস করে এবং তারা বিভিন্ন পেশার কাজ করে। বাংলাদেশীরা সাধারণত গৃহস্থালী কর্মী ও শ্রমিক হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে যায় তার মধ্যে সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশী শ্রমিক যোগান দেয় এবং ১ মিলিয়নেরও বেশী বাংলাদেশী আরব আমিরাতে বসবাস করে। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বিএমইটি তথ্য অনুযায়ী ১৯৭৬ থেকে ২০১৬ সালের মার্চ পর্যন্ত ৫ লাখ ৫হাজার ৪৭ জন বাংলাদেশী গেছেন কুয়েতে। এর মধ্যে ১৯৭৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত গড়ে প্রতিবছর ১০ হাজার নাগরিক কুয়েতে গেছেন। প্রতি বছর ৩০ থেকে ৪০ হাজার নাগরিক কুয়েতে যেতে থাকেন। জনশক্তি রফতানিকারকরা বলেছেন, ২০০৫ সালেও ৪৭ হাজার কর্মী গেছেন দেশটিতে। বাজার পুরোপুরি চালু হলে বছওে ৫০ হাজারেরও বেশী কর্মীর কর্মসংস্থান হতে পারে। বর্তমানে আমাদের দেশের নাগরিকগন যদি সহজ শর্তে বিদেশে যেতে পারে জনশক্তি কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয় যদি বিষয়টিকে আমলে নেয় তাহলে এদেশের জনসংখ্যা অভিশাপ নয় বরং আশির্বাদ হবে। দেশ হবে উন্নত বাড়বে রেমিটেন্স, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ফিরে আসবে, বেকারত্ব হ্রাস পাবে।