ঝালকাঠিতে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গৃহপরিচালিকাকে ধর্ষন অভিযোগে মামলা

ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধি:: ইমাম বিমান
সদর উপজেলাধীন এক মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গৃহ পরিচালিকা ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগ মামলা হয়েছে।
সদর উপজেলার তেরআনা গ্রামের সৈয়দ জালাল হোসাইনের ছেলে শাহমাহমুদিয়া আলিম মাদ্রাসার অধক্ষ্য এস এম কামাল হোসাইন এর বাসায় গৃহ পরিচালিকা ও নিজ প্রতিষ্ঠানের অষ্টম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগ ওঠায় অভিযুক্ত অধ্যক্ষ কামাল হোসাইন এলাকা থেকে পালিয়েছেন।
এ বিষয় মামলার নথিরপত্রের উধৃতি দিয়ে ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোনিত কুমার গায়েন জানান, অভিযুক্ত অধ্যক্ষ এসএম কামাল হোসেনের বাসায় ৫ বছর ধরে ৮ম শ্রেনী পড়ুয়া ঐ ছাত্রী লেখাপড়ার পাশাপাশি বাসায় গৃহপরিচালিকার কাজ করতো। গত শনিবার (১৭ আগস্ট) রাতে খবর পেয়ে পুলিশ অধ্যক্ষ কামালের মেঝ ভাই জামালের বসত ঘর থেকে ছাত্রীকে উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নিয়ে আসে। ঘটনার পর থেকে অধ্যক্ষ কামাল হোসাইন পলাতক রয়েছেন। নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, গত ১৫ আগস্ট দুপুরে কামাল হোসাইনের বাড়িতে ওই ছাত্রী সর্বশেষ ধর্ষণের শিকার হলে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়। পরে অধ্যক্ষ কামাল নিজেকে আত্মগোপন করেন। অপরদিকে ছাত্রীটিকে কামালের মেঝ ভাই জামাল উদ্দিনের বাড়িতে আটকে রাখা হয়। আর সেখান থেকেই পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার লোকজন জানায়, চরম দরিদ্র পরিবারের মেয়েটিকে বাসায় কাজে রেখে দীর্ঘদিন থেকে অধ্যক্ষ কামাল হোসাইন শারীরিক সর্ম্পক করে আসছিলেন। ১৫ আগস্ট শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা অধ্যক্ষের স্ত্রী দেখে ফেললে বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এ সময় তার স্ত্রী ডাকচিৎকার দেয় ও স্বামী কামিল উদ্দিনসহ ধর্ষিতা কিশোরীকে জুতাপেটা করলে এলাকাবাসীর মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে ধর্ষক কামাল উদ্দিন তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে গা ঢাকা দেয়।
এলাকাবাসী আরোও জানায়, এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, মাদ্রাসা সুপার কামাল উদ্দিন জামায়াত মনা রাজনীতি এই ব্যক্তি নিজ স্বার্থ রক্ষার্থে ক্ষমতাসীন দলের সাথে যুক্ত থেকে বর্তমান সরকারের আমলেও অত্যন্ত প্রভাবশালী অবস্থানে থাকায় পুরো এলাকার কেউ তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খোলার সাহস রাখেনা। দু/এক বছর আগেও ল্যম্পট ও দুশ্চরিত্রা মাদ্রাসা সুপার কামাল উদ্দিন নিজ মাদ্রাসার আলিম শাখার এক ছাত্রীকে ধর্ষন করে ধরা পড়লেও স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের হস্তক্ষেপে তখন বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সক্ষম হন। তারও আগে এই মাদ্রাসার একাধিক ছাত্রকে বলৎকারের ঘটনা ঘটনালেও কেউ প্রতিবাদ করেনি বলেও জানায়।
উক্ত ঘটনায় রোববার দুপুরে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ঝালকাঠি সদর থানায় অধ্যক্ষ কামাল হোসেনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্ত অধ্যক্ষ পালিয়ে গেলেও তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলেও জানান ওসি শোনিত কুমার গায়েন।
এ ব্যাপারে কামাল উদ্দিনের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে ( ০১৭১৬৯৫৮২৭৮) কয়েক বার কল করলেও তার সেল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। এদিকে মাদ্রাসা সুপার কতৃর্ক নিজ ছাত্রীকে ধষনের ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে।