হঠাৎ জ্বর হলে করণীয়

হঠাৎ করে যে কেউ জ্বরে আক্রান্ত
হতে পারেন। তবে জ্বর নিজে কোনো
রোগ নয়, অন্য রোগের লক্ষণ।
শরীরে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াসহ
জীবাণুর আক্রমণ ঠেকাতে শরীরের
নিজস্ব প্রক্রিয়ার কারণেই জ্বর আসে।
সাধারণত শরীরের তাপমাত্রা ৯৮
দশমিক ৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট।
তাপমাত্রা ৯৮ দশমিক ৮ থেকে ১০০
দশমিক ৮ এর মধ্যে থাকলে তা মাইল্ড
ফিভার বা সামান্য জ্বর হিসেবে
পরিচিত। ১০৩ ডিগ্রি পর্যন্ত মডারেট
বা মাঝারি জ্বর, এর ওপরে তাপমাত্রা
গেলে তা হাই ফিভার বা উচ্চজ্বর
হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জ্বর এলে
অনেকের গলা ব্যথা, কাশি, খাবারে
অরুচি, সেই সাথে শরীরে দুর্বলতা
দেখা দেয়। চলুন জেনে নিই জ্বর হলে
করণীয় কিছু বিষয় সম্পর্কে-
১. জ্বরের প্রধান ও প্রথম চিকিৎসা
হচ্ছে প্রচুর তরল খাবার খাওয়া। পানি
তো চলবেই, সাথে গরম স্যুপ, আদা-চা,
জুস ইত্যাদিও চলবে। গরম পানীয়তে
কাশিটা নিয়ন্ত্রণে আসবে। আদা-চা ও
গরম পানীয় গলা ব্যথা ও মাথা ব্যথা
দূর করতে সহায়ক।
২. জ্বর হলে রোগীর পুরো শরীর
স্পঞ্জিং (ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে
দেওয়া) করিয়ে দিতে হবে। টানা
প্রায় ১০ মিনিট অবিরাম স্পঞ্জিং
করলে তাপমাত্রা কমে যেতে পারে।
তবে যাদের অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগা
বোঝা যাবে, যেমন কাশি ও বুকের
মধ্যে ঘড়ঘড়ে ভাব দেখা দিলে তাদের
স্পঞ্জিং করার সময় বুকে যাতে
ঠান্ডা না লাগে সেদিকে খেয়াল
রাখতে হবে। তাদের ঠান্ডা পানি
মোটেও খাওয়া যাবে না। তাদেরকে
গরম পানি মিশিয়ে খাওয়ানো ভালো।
স্পঞ্জিং করার সময় হালকা করে
ফ্যান ছেড়ে রাখতে পারেন। আবার
খেয়াল রাখতে হবে যাতে বাতাস
রোগীর শরীরে যেনো ডাইরেক্ট না
লাগে।
৩. জ্বর হলে সাধারণত ডাক্তারা নাপা
বা প্যারাসিটামল জাতীয় ট্যাবলেট
খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
তবে প্যারাসিটামলের অতিরিক্ত
কোনো ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ
ছাড়া খাওয়া মোটেও উচিত হবে না।
৪. স্বাভাবিক ঠান্ডা জ্বর হলে
প্যারাসিটামল কিংবা স্পঞ্জিং
করে জ্বর চলে যেতে পারে। তবে যদি
৩ দিন বা তার অধিক দিন জ্বর থাকে
তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ
নিতে হবে।
৫. গরম পানিতে লেবুর সঙ্গে মিশিয়ে
আদা কুচি খেতে পারেন। এটি
ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশনের
সঙ্গে লড়াই করে। ফলে জ্বর কমতে
পারে।
৬. জ্বরের সময় এক চা চামচ জিরা এবং
৪-৬টা তুলসীপাতা এক গ্লাস পানিতে
নিয়ে সিদ্ধ করে সেখান থেকে
প্রতিদিন দুইবার এক চা চামচ খেতে
পারেন।
এছাড়া জ্বরের সময় আরেকটি উপকারী
খাবার হলো চালের সুজি, সঙ্গে
সামান্য আদাকুচি ও সিদ্ধ করা সবজি।
কিশমিশে আছে ভিটামিন-সি ও
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা দ্রুত সুস্থ হতে
সাহায্য করে। জ্বরের রোগীর জন্য
আরেকটি উপকারী খাবার হলো
টমেটো ও গাজরের স্যুপ।