প্রেমের টানে সেচ্ছায় গুম, অত:পর।

নিজস্ব প্রতিবেদক :
এরই মধ্যে হঠাৎ করে গত বছর ৩০শে
সেপ্টেম্বর স্বামীর বাড়ি থেকে
নিখোঁজ হয়ে যায় আছিয়া। অনেক
খোঁজা-খুঁজি করে তাকে না পেয়ে ঘটনার
এক দিন পর স্বামী রিপন কাজী ঘাটাইল
থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
এদিকে বোন নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ভাই
নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে তার বোন জামাই
রিপন কাজীর বিরুদ্ধে খুন ও গুমের
অভিযোগ এনে টাঙ্গাইল কোর্টে একটি
মামলা দায়ের করেন। রিপন কাজীসহ তার
মা ও তিন ভাইকে এ মামলায় আসামি করা
হয়। এক বছর ধরে উভয়ের মধ্যে চলতে থাকে
মামলা-পাল্টা মামলা। এরই মধ্যে গত
কয়েকদিন আগে আবির্ভাব হয় আছিয়ার।
কোলে তিন মাসের শিশু সন্তান। প্রেমিক
স্বামী জুবায়েরের এর বাড়ি উপজেলার
কাশতলা (সাতাইপাড়া) গ্রামে তার
দেখা মেলে। শিশু কোলে আছিয়াকে
দেখে জুবাইরের বাড়ির লোকজন প্রথমে
মনে করেছিল হয়তো ছেলের সঙ্গে
বেড়াতে এসেছে। আছিয়া জুবায়েরের
স্ত্রী এমন পরিচয় জানতে পেরে
পরিবারসহ বাড়ির সবাই বিস্মৃত হয়। পরে
ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে থাকে আসল
ঘটনা।
আছিয়া খাতুন জানায়, আগের স্বামী
রিপন কাজী আমাকে মাঝে মধ্যেই
নির্যাতন করত। এ কথা আমি কাউকে
বলিনি। এ অবস্থায় একদিন মোবাইলে
জুবায়েরের সঙ্গে পরিচয় হয়। গড়ে ওঠে
গভীর প্রেমের সম্পর্ক। প্রেমের টানে
স্বামীর বাড়ি ছেড়ে চলে আসি
কালিহাতী। জুবায়েরকে জানাই আমি সব
ছেড়ে চলে এসেছি। এরপর সেখান থেকে
তার হাত ধরে বগুড়ায় চলে যাই। সেখানে
দুসম্পর্কীয় এক আত্মীয় সবুজের বাসায় দুই
মাস থেকেছি। পরে বগুড়া নোটারী
পাবলিকের কার্যালয়ে গিয়ে
এফিডেভিটের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে
আবদ্ধ হই। বগুড়া থেকে চলে এসে আমরা
বাড়ির কাছে হামিদপুর বাজারে একটি
ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করি। আমি আমার
পরিবারের সবার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ
করে দেই,
জুবায়েরের বাবা আঃ লতিফ বলেন, আমার
ছেলে হামিদপুর বাজারে রং মিস্ত্রির
কাজ করে। বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানেই
থাকে। সে যে বিয়ে করেছে একথা বাড়ির
কেউ জানেনা। ছেলেও আমাকে বলে নাই।
এমনকি এলাকাবাসীও জানে না। একই
কথা বললেন জুবাইরের মা ফরিদা
ইয়াসমিন।
আছিয়ার সাবেক স্বামী রিপন কাজী
বর্তমানে প্রবাসী। কথা হয় তার ছোট ভাই
কাজী গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে। তিনি
বলেন, আছিয়া নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে
সঙ্গেই ভাই রিপন কাজীকে সঙ্গে নিয়ে
ওনার বাবার বাড়ি যাই। তারা
আমাদেরকে সহযোগিতা না করে খুন ও গুম
মামালায় ফাসানোর হুমকি দেয় এবং পরে
মামলা করে। যেহেতু এক বছর পর মেয়েটি
বেরিয়ে এসেছে, তাই প্রমান হয়েছে যে
তারাই এত দিন এ নাটক সাজিয়ে
আমাদেরকে মিথ্যা মামলায় হয়রানি
করেছে।
মামলার বাদী আছিয়ার ভাই নজরুল
ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে
যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত নম্বরটি
বন্ধ পাওয়া যায়।