এএসটি সাকিলঃ- স্বাদ ও মান ভালো হওয়ায় সারাদেশে রয়েছে দ্বীপ জেলা ভোলার সুপারির কদর।
ভোলা জেলা প্রাচীনকাল থেকেই ধান সুপারির জন্য বিখ্যাত। প্রতিবছর বিপুল পরিমান ধানের পাশাপাশি সুপারি উৎপাদন করা হয় এই জেলায় । এখানকার গ্রামগুলোত এখোনো হাজার হাজার হেক্টর জমিতে সুপারির বাগান রয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হওয়ায় সুপারির চাষে অনেকের আগ্রহ বাড়ছে। বোরহানউদ্দিন কৃষি অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা যায় , চলতি মৌসুমে বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে সুপারির আবাদ করা হয় এর মধ্যে এই উপজেলায় ১০ হাজার মেঃ টন সুপারি উৎপাদন হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ।
অতি প্রাচীনকাল থেকেই এখানে বিস্তীর্ণ ভূমিতে সুপারির চাষ করা হয়। গ্রামীণ পথের দুই পাশে অগণিত সুপারির বাগান চোখে পড়ে। কাঁচা সুপারির পাশাপাশি এখানে শুকনো সুপারিরও বেশ কদর রয়েছে। বৈশাখ-জৈষ্ঠ মাসে সাধারনত সুপারির ফুল আসে। আর কার্তিক-অগ্রাহায়ন সুপারির ভরা মৌসুম। এই সময় গাছ থেকে সুপারি পাড়া হয়। পাকা সুপারিকে রোদে শুখিয়ে শুকনো সুপারিতে পরিণত করা হয়। এই সুপারি অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষন করা যায়। এছাড়া কাঁচা-পাকা সুপারিকেও ভিজিয়ে দীর্ঘদিন রাখা যায়। স্থানীয় ভাবে পান সেবনকারীদের কাছে এর বেশ চাহিদা রয়েছে।
বোরহানউদ্দিনের সুপারি যাচ্ছে গোটা দেশের বিভিন্ন বাজারে। উপজেলা সদরের আড়তগুলো থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বড় বড় ব্যবসায়ীরা সুপারি কিনছেন। তা ছাড়া স্থানীয় বাগান মালিকেরাও ব্যক্তি গত ভাবে প্রতি বছর গড়ে পঞ্চাশ হাজার থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাড়তি আয় করছেন।
বোরহানউদ্দিনে পৌরসভার গয়না ঘাটের মেসার্স পাটোয়ারী ট্রেডার্স এর মালিক মোঃ সজিব পাটোয়ারী বলেন , এ বছর সুপারি উৎপাদন কম হয়েছে প্রতি ভি সুপারি ৬০০ (শত) টাকা থেকে ৬৫০ টাকা বিক্রি হয়। আর এই সুপারি গুলো আমরা খরিদ করে উত্তরাঞ্চলের বগুড়া, ময়মনসিংহ , ঢাকা, দিনাজপুর সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠাই। রাণীগঞ্জ বাজারের আড়তদার মোঃ ইসমাইল মিয়া বলেন , ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মোবাইলের মাধ্যমে বড় বড় ব্যবসায়ীদের কাছে সুপারি বিক্রি করে আমরা লাভবান হই ।
উপজেলার পক্ষিয়া , কুতুবা , টগবী, কাচিয়া ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার সুপারি বাগানের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ অঞ্চলের অধিকাংশ বাড়িতে সুপারির বাগান রয়েছে। চারা লাগানোর পর আর তেমন কিছু করতে হয় না। কয়েক বছর পর এমনিতেই গাছে সুপারি ধরতে শুরু করে। প্রতি বছর সুপারি বিক্রি করে গড়ে পঞ্চাশ হাজার থেকে লাখ লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়তি আয় করছেন স্থানীয় বাগান মালিকেরা।
বোরহানউদ্দিন উপজলা কৃষি অফিসার গোবিন্দ মন্ডল দৈনিক রুপালি বাংলাদেশেকে ’কে জানান, উপজেলার প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে সুপারির বাগান রয়েছে। স্বল্প পরিশ্রমে ও ব্যয়ে বাড়তি আয় হয় বলে অনেকের মধ্যে সুপারির বাগান করার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। আর এর থেকে কৃষক ভাইয়েরা ৮০ থেকে ৮৫ কোটি আয় করে আত্নসামাজিক মর্যাদা লাভ করে দেশের কৃষি খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ।