সালেহ আহমদ (স’লিপক):
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীট নবীগঞ্জ সরকারি কলেজে অনার্স ১ম বর্ষে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। নিয়মের বাহিরে টাকা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। মাসিক বেতন ছাড়াও বিভিন্ন খাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এসব টাকা আদায় করা হচ্ছে। বাড়তি টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকারও করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ। তবে বাড়তি টাকার মধ্যে কোনো খাতে কত টাকা নেয়া হয় এ বিষয়ে সঠিক কোন ব্যখ্যা দিতে পারেননি তিনি।
অপরদিকে অতিরিক্ত ফি দিতে হিমশিম খাচ্ছেন অসচ্ছল ও অসহায় অভিভাবকরা। অনেকেই ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ধারদেনা এনে ফি’র টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এনিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরকারি কলেজে পড়ালেখার এমন খরচ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচা চলছে নবীগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। প্রতিনিয়ত নিয়ম বহির্ভূত টাকা আদায়ের বিরুদ্ধে অনেক শিক্ষার্থীরা আবার আন্দোলনের প্রস্ততি নিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।
কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, অনার্স ১ম বর্ষের ফরম পূরণে বোর্ড ফি ২ হাজার টাকার কম হলেও ফরম পূরণের সময় মাসিক বেতন সহ বিভিন্ন খাত দেখিয়ে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় ৬ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। যা সরকারি ফি’র তুলনায় তিনগুণেরও বেশী। এছাড়া একটি ফরম (ফটোকপি) ক্রয় করতে ১০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। যা এর আগে বিনামূল্যে কলেজ থেকে বিতরণ করা হতো। কলেজে ভর্তিকৃত ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী ১০০ টাকা করে দিলে ৩০ হাজারেরও বেশি টাকা জমা হচ্ছে। এ টাকার জন্য কলেজ থেকে কোন রশিদও দেয়া হচ্ছে না। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রশ্ন, এই টাকা তাহলে কার পকেটে যাচ্ছে?
এ বিষয়ে কলেজের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সচেতন মহলের একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা হলে তারা অভিযোগ করে বলেন, সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় মাসিক বেতন ও বিভিন্ন ফি’র নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। যেনো এটা অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কোনো এক কসাইখানা! এই কলেজের অনিয়ম দূর্নীতির দিকে নজর দেওয়ার মতো কি কেউ নেই? সরকারি কলেজ হলেও মাসিক বেতন নেওয়া হয় বেসরকারি কলেজের থেকেও বহুলাংশে বেশি।
মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা এসে সরকারি কলেজে ভর্তি হয় যাতে টাকা-পয়সার বিষয়ে তাদের হয়রানি হতে না হয়। কিন্তু এখানে বিষয়টা একদম বিপরীত। এ বিষয়ে প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন তারা।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ ফজলুর রহমান বলেন, কলেজের যাবতীয় খরচ শিক্ষার্থীদের বেতনের টাকা থেকেই তুলতে হয়। ফরম পূরণের নামে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বোর্ড ফি বাবদ ১ হাজার ৮শ টাকা ও ৬ মাসের বেতন বাবদ ৩ হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে। বাকী টাকার বিষয়ে কোন ব্যখ্যা দিতে পারেন নি তিনি।
নবীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলমের সাথে মোঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নই। অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হলে ভুক্তভোগীরা ইউএনও বরাবর অভিযোগ দিতে বলেন তিনি।