পঞ্চগড়ে শশুর, শাশুড়ি গলায় ফাঁস লাগিয়ে গৃহবধুকে হত্যার চেষ্টা।
উমর ফারুক পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি :পঞ্চগড় সদর উপজেলায় রাধা রাণী ( ২৪ ) নামেরএক নিরীহ গৃহবধুকে পরিকল্পিত ভাবে গলায় ফাসঁ লাগিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে শশুর বাড়ির লোকজন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলা ৪ নং কামাদ কাজলদিঘি ইউনিয়নের ফুলপাড়া গ্রামের সুভাষ চন্দ্রর বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটেছে। আহত গৃহবধুকে রাতেই উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে আশংকাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে। রাধা রাণী বোদা উপজেলা বড়শশী ইউনিয়নের বদেশ্বরী গ্রামের দিনমজুর জ্যোতিষ চন্দ্র রায়ের মেয়ে । দিনমজুর হলেও মেয়ের সুখের জন্য প্রায় ৭/৮ বছর পূর্বে হিন্দু আইন মেনে ধুমধাম করে রাধা রাণীকে বিয়ে দেয় তার বাবা। উপজেলার ফুলফাড়া গ্রামের সুভাষ চন্দ্রের ছেলে সুমনের সাথে বিয়ে হয় রাধা রাণীর । বিয়ের সময় রাধা রাণীর বাবা মেয়ের সুখের জন্য বিভিন্ন আসবাপত্রসহ নগত টাকাও উপহার দেন। দাম্পত্য জীবন সুখের হলেও কিছুদিন পর যৌতুকের দাবিতে শ্বশুর-শাশুড়ির জ্বালা-যন্ত্রণা ও নির্মম নির্যাতন শুরু হয় রাধা রাণীরওপর। মেয়ের সুখের জন্য দরিদ্র বাবা বসতভিটা বিক্রি করে পর্যায়ক্রমে প্রায় লক্ষাধীক টাকা স্বামী ও তার শ্বশুর-শাশুড়ির হাতে তুলে দেন। কিন্তু এতেও রক্ষা পায়নি রাধা রাণী। দিনের পর দিন নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই চলতে থাকে। এ বিষয়ে রাধারানীর মা রত্না বলেন, আমার মেয়েকে সবসময় মারধর করতে থাকে, আমরা বাধ্য হয়ে সুমনসহ তার পরিবারের উপর কোর্টে গিয়ে আমরা তিনটি মামলা করি । তাও শিক্ষা হয়নি তাদের । আমাদের সাথে আমার মেয়ে যোগাযোগ করতে পারতেছে না । দেখা সাক্ষাৎ করতে পারতেছে না । আমার মেয়ে আমাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে , নির্মমভাবে মারে আমার জামাই সহ তার পরিবার । এলাকাবাসী জানান , বাবা দিন মজুর হওয়ায় যৌতুক দিতে নাপারায় দিনের পর দিন অমানবিক অত্যাচার শুরু হয় মেয়েটির উপর। বর্তমানে দুটি সন্তান রয়েছে, বর মেয়ে তিশা রাণী ( ৮ ) বছর এবং ছোট মেয়ের বয়স ( ১০ ) মাস । শিশু সন্তানের মুখের দিকে থাকিয়ে শশুর বাড়ির লোকজনের অত্যাচার সহ্য করে সংসার করতে থাকে রাধা রাণী । অবশেষে বৃহস্পতিবার শুশুর, শাশুড়ি মারধর করে পরিকল্পিত ভাবে গলায় ফাসঁ লাগিয়ে মেরে ফেলার জন্য পরিল্পনা করে । একপর্যায়ে রাধারানী চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে আসেন, এলাকাবাসী ছুটে আসায় , মারধোর করা বন্ধ করে দেন সুভাষচন্দ্র এবং কিরণমালা । এবং সেখান থেকে তাৎক্ষণিক এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন । এবং পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখেন এলাকাবাসী। রাজা রানীর গলায় প্রচণ্ড আঘাতের কারনে এবং মুখে অক্সিজেন থাকায় রাধারানীর সাথে কথা বলা যায়নি । তবে তার আট বছরের মেয়ে তিশা রানি সাংবাদিকদের বলেন, আমার মাকে আমার বাবা, আমার দাদা দাদি ধরে ধরে মারে , আমি রাতে ঘুমাই ছিলাম চেঁচামেচিতে ঘুম ভাঙলে দেখি আমার মাকে ধরে মারতেছে আমার বাবা বাসায় ছিল না। কোথায় যেন গেছে। পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আবদুল লতিন মিয়া মুঠোফোনে জানান, স্থানীয়রা আমাদের খবর দিলে আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই , এবং গিয়ে দেখা যায়, রাধারাণী কে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখে পুলিশ খবর দেন , এবং সেখান থেকে কিরণ বালা কে গ্রেফতার করে আজ আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে । মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাসপাতালে যাওয়া হয়েছে, মেয়েটির গলায় প্রচণ্ড আঘাতের কারনে কথা বলার ভারসাম্য হারিয়ে পেলে। মেয়েটি বর্তমানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। তার পরিবার থেকে আমরা এখনো পর্যন্ত কোন অভিযোগ বা মামলা করেননি । আমরা অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব ।