আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও, রহিমদ্দির ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও ।

“
বাড়ি তো নয় পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছানি,
একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি ।
একটুখানি হাওয়া দিলেই ঘর নড়বড় করে,
তারি তলে আসমানীরা থাকে বছর ভরে ।
পেটটি ভরে পায় না খেতে, বুকের ক-খান হাড়,
সাক্ষী দিছে অনাহারে কদিন গেছে তার ।।
দেশ ভাগের ঠিক আগের বছর ১৯৪৬ সালে কবি জসীমউদ্দীনের ভাই সরকারী রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যাপক নুরুদ্দিন আহমেদ এর শ্বশুর বাড়ি ফরিদপুর সদরের ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের (শিবরামপুর স্টেশন বর্তমান আমিরাবাদ স্টেশনের পাশে) রসুলপুর গ্রামে বেড়াতে যান কবি। সেখানে বেড়াতে গিয়েই এই আসমানীর দেখা পান। তখন আসমানীর বাড়ির উঠানে আসমানীর সামনে বসেই তিনি এ কবিতা লেখেন।
কবিতার এই একটি চরিত্র থেকেই ফরিদপুরের রসুলপুর গ্রামের অতি সাধারণ এই আসমানী বেগম সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে হয়ে উঠেছিলেন অতি পরিচিত একটি নাম ।
পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের এই ‘আসমানী’ কবিতাটি ১৯৪৯ সাল তাঁর ‘এক পয়সার বাঁশি’ কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে এই কবিতা মাধ্যমিক স্কুলের পাঠ্য বইয়েও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
জসীমউদ্দীন এর নানা সাহিত্য কর্মে কালজয়ী নানা চরিত্র যেমন রুপাই, সাজু, হাজেরা বিবি, গণি মিয়া এবং আসমানী।
এসব চরিত্রই পল্লীকবি এঁকেছিলেন বাস্তবের মানুষ দেখেই। ইতোপূর্বে একে একে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন রুপাই, সাজু, গণি মিয়া এবং হাজেরা বিবি।
দীর্ঘদিন হৃদরোগ ও কিডনি জটিলতায় ভুগে সবশেষে ২০১২ সালে বিদায় নেন পল্লীকবির অমর সৃষ্টি ‘আসমানী’ কবিতার বাস্তব চরিত্র আসমানী বেগমও ।
তবে তাঁরা সকলেই বেঁচে থাকবেন মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেয়া পল্লীকবির সাহিত্য কর্মে।
ছবি : আসমানী বেগম
সংগৃহীত পোস্ট।